জন্মের পর থেকেই ত্যাগ করে যেতে হয় মেয়েদের - Women Words

জন্মের পর থেকেই ত্যাগ করে যেতে হয় মেয়েদের

মহসিনা জান্নাত রিমি

ছেলেরা কাউকে ভালোবাসলেই ঝট করে বলে ফেলে, পুরো পৃথিবীকে জানিয়ে দেয়। কিন্তু একটি মেয়ের ভালোবাসা সম্পূর্ণ আলাদা, তারা সহজে কাউকে ভালোবাসতে চায় না। ভালোবাসলেও নিজের ভিতরে রাখে, মুখে প্রকাশ করে না। একবার যদি কোন মেয়ে কোন ছেলেকে ভালোবাসে তাহলে সে আপ্রাণ চেষ্টা করে ভালোবাসাকে টিকিয়ে রাখতে। মেয়েদের মন নরম, সেই মন কারও প্রেমে পড়লে আরও নরম হয়ে যায়। কিন্তু অনেক ছেলেরা তা দেখে না, বুঝেও না। তারা শুধু মেয়েদের বাহিরের রাগ, অভিমান, ঝগড়াটা দেখে। কিন্তু সেই রাগ, অভিমান আর ঝগড়ার আড়ালেই লুকিয়ে থাকে গভীর ভালোবাসা, যা তাদের দৃষ্টি এড়িয়ে যায়। মেয়ের মন এটাই চায়, কেউ তাকে এতটা ভালোবাসুক, যতটা কেউ এর আগে কাউকে বাসেনি।

ভালোবাসার মানুষ আপনার সাথে রাগ দেখাবে এটাই স্বাভাবিক। নাকি অন্য কারও সাথে দেখাবে? পোস্টে মেয়েদের পক্ষে কথা বলে ফেললাম, কিন্তু সব মেয়ে বা ছেলে একরকম নয়। তাদের ভালোবাসার প্রকাশও একরকম নয়। পৃথিবীতে মানুষ ভিন্ন ভিন্ন, ভিন্ন তাদের ভালোবাসা, ভিন্ন সেই ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ, কেউ ভালোবাসে কষ্ট দিয়ে, কেউ ভালোবাসে নিজে কেঁদে, আবার কেউবা ভালোবাসে ঝগড়া করে। ভালোবাসা ভিন্ন হতে পারে, ভালোবাসার মানুষগুলো ভিন্ন হতে পারে, কিন্তু সকল ভালোবাসার মানুষের লক্ষ্য একটাই যাকে- ভালবাসি মন প্রান উজাড় করে ভালোবাসি, ভালোবাসবো, বেসে যাব জনম জনম ধরে।

একটি মেয়েকে জন্মের পর থেকেই ত্যাগ করে যেতে হয়। ত্যাগ করতে হয় তার ইচ্ছেগুলো, মনের অনুভূতিগুলো। ত্যাগ করতে হয় বয়ফ্রেন্ডকে, ত্যাগ করতে হয় পিতার ঘর, বিয়ের পর ত্যাগ করতে হয় তার নাম, সন্তান লাভের পর ত্যাগ করতে হয় তার রাতের ঘুম, খাওয়া-দাওয়া। সন্তান বড় হয়ে খারাপ আচরণ করলে ত্যাগ করতে হয় সন্তানকে ঘিরে জমানো সকল আশা-ভরসাকে। আবার ছেলের বউ ভালো না হলে তাহলে ত্যাগ করতে হয় স্বামীর ঘরও। মেয়েটির শেষ জীবনের ঠিকানা হয় বৃদ্ধাশ্রম। আর একমাত্র সঙ্গী হয় তখন চোখের জল।

পরিশেষে একথা বলব, মেয়েরা স্রস্টার অপরূপ সৃষ্টি। একজন নারী কারো মেয়ে, কারো বোন, কারো স্ত্রী, কারো বা মা। মেয়েদের মন খুব কোমল, সেই কোমল মন শুধু একটা জিনিস চায়, সেটি হল প্রিয় মানুষটির কাছ থেকে অফুরন্ত ভালোবাসা। বাবা-মা, ভাই, স্বামী, সন্তান, সন্তানের বউ, শ্বশুর, শাশুড়ি সমস্ত আপনজনদের কাছ থেকে শুধু ভালোবাসাটাই চায় একটি মেয়ে। তার সেই কোমল হৃদয়ে আঘাত করোনা বন্ধু, কখনো কষ্ট দিয়ো না। শুধু তাকে আপন করে ভালোবাসা দিয়ে দেখো, সমস্ত পৃথিবীর সাথে লড়াই করতে পারবে শুধু তোমার জন্য। সেই তুমি হতে পারো তার বয়ফ্রেন্ড, তার স্বামী, কিংবা তার ছেলে।
লেখক : সভাপতি, মেট্রো ওয়াশিংটন মহিলা আওয়ামীলীগ