জঙ্গি অর্থায়নের অভিযোগে সিঙ্গাপুরে ৪ বাংলাদেশীর কারাদন্ড - Women Words

জঙ্গি অর্থায়নের অভিযোগে সিঙ্গাপুরে ৪ বাংলাদেশীর কারাদন্ড

জঙ্গি অর্থায়নের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আজ মঙ্গলবার  চার প্রবাসী বাংলাদেশিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছে সিঙ্গাপুরের একটি আদালত। সিঙ্গাপুরের দৈনিক স্ট্রেইটস টাইমস অনলাইন ও বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়।

দন্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন মিজানুর রহমান (৩১), রুবেল মিয়া (২৬), মো. জাবাথ কায়সার হাজি নুরুল ইসলাম সওদাগর (৩১) ও সোহেল হাওলাদার ইসমাইল হাওলাদার (২৯)।

দলনেতা রহমান মিজানুরকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। এছাড়া রুবেল ও জাবাথকে আড়াই বছর করে এবং চতুর্থজনকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

আসামিদের আদালতে প্রথম তোলা হয় গত মে মাসের ২৭ তারিখ। তাই সেদিন থেকে এই দণ্ড কার্যকর বলে ধরা হবে।
গত এপ্রিলে সিঙ্গাপুরের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা আইনে (আইএসএ) ওই চার প্রবাসী বাংলাদেশি আটক হন। পরে তাঁরা আদালতে দোষ স্বীকার করলে জঙ্গি অর্থায়নের অভিযোগে তাঁদের দোষী সাব্যস্ত করা হয়। যার রায় আজ ঘোষণা করলেন আদালত।

সিঙ্গাপুরের টেররিজম (সাপ্রেসিং অব ফাইন্যান্সিং) অ্যাক্টের অধীনে ছয় বাংলাদেশিকে আটক করা হয়। কারাদণ্ড পাওয়া চারজন ওই দলেরই অংশ। অন্য দুজন হলেন জামান দৌলত (৩৪) ও মামুন লিয়াকত আলী (২৯)। বিচারের মুখোমুখি হয়ে তাঁরা আদালতে অভিযোগ অস্বীকার করেন।

আদালতের তথ্য অনুযায়ী, এই দলটির অধিনায়ক ছিলেন মিজানুর। মামুনের অবস্থান ছিল দ্বিতীয়। রুবেল ছিলেন কোষাধ্যক্ষ। যোগাযোগ রক্ষার কাজ করতেন জাবাথ। জামান ও সোহেল দলের নিরাপত্তা ও যোদ্ধা অংশটির তত্ত্বাবধান করতেন। জঙ্গিবাদী কার্যক্রমে অর্থায়নের জন্য তহবিল রাখারও অভিযোগ আনা হয় রুবেল ও জাবাথের বিরুদ্ধে।

আদালতের তথ্য থেকে আরও জানা যায়, গ্রেপ্তারের সময় জাবাথের কাছে এক হাজার ৩৬০ ডলার পাওয়া গিয়েছিল। এর মধ্যে এক হাজার ৬০ ডলার তাঁকে দেন রুবেল। ছয়জন ৬০ ডলার থেকে ৫০০ ডলার পর্যন্ত চাঁদা দিয়েছেন তহবিল গঠনের জন্য।

স্ট্রেইটস টাইমস বলছে, তারা সরকার পতনের লক্ষ্যে বাংলাদেশে ফিরে হামলা চালানোর পরিকল্পনা করছিলেন। বাংলাদেশে ইসলামিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করাই ছিল তাঁদের উদ্দেশ্য। আর সেই রাষ্ট্রকে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠনে আইএসের স্বঘোষিত খেলাফতের অধীনে নেওয়া।

রায় ঘোষণার সময় জেলা জজ কেসলার সোহ বলেন, জঙ্গিবাদ কেবল সিঙ্গাপুরের জন্য নয়, পুরো বিশ্বের জন্যই একটি বড় ঝুঁকি।এক্ষেত্রে দোষীদের কঠোর শাস্তি দেয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।

দেশটির নতুন সন্ত্রাসবিরোধী আইনে প্রথমবারের মত কারো সাজা দেয়া হলো।

দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আটক হবার সময় এদের কাছে বোমা তৈরি এবং স্নাইপার রাইফেল চালানোর নির্দেশিকা এবং বাংলাদেশের সরকারি ও সেনা কর্মকর্তাদের একটি তালিকা পাওয়া যায়। তালিকাটি পরবর্তী হামলার টার্গেট হিসেবে ব্যবহৃত হত বলে ধারণা করা হয়।

গত বছরের শেষদিকে সিঙ্গাপুরে ২৭ জন বাংলাদেশিকে গ্রপ্তার করা হয়, যাদের পরে বহিষ্কার করা হয়। এর মধ্যে একজন চুরির অভিযোগে এবং বাকি ২৬ জনকে জঙ্গি তৎপরতায় জড়িত থাকার অভিযোগে ঢাকায় পাঠানো হয়। বাংলাদেশ থেকে যাওয়া কর্মীরা মূলত সিঙ্গাপুরের আবাসন খাতে নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন।