কন্যা সন্তানেরা জাগো (পর্ব-এক) - Women Words

কন্যা সন্তানেরা জাগো (পর্ব-এক)

অনন্যা হক

আমাদের আদি পুরুষেরা সেই যুগে মেয়েদেরকে লেখাপড়া করার সুযোগ দিত না।অন্দরমহলে রেখে দিত।তাদেরকে ঘরের কাজের জন্য শুধু মাত্র দাসীর মত করে বড় করে তুলতো। কালের বিবর্তনে, মেয়েদের সুপ্ত বাসনা এবং কিছু উদার, আধুনিক, মানসিক ভাবে শিক্ষিত পুরুষদের সাহায্য পেয়ে, মেয়েরা ঘুরে দাঁড়াতে শেখে, সাহস পায়।তাই আজ মেয়েরা এখানে। মেধা আর যোগ্যতায় মেয়েরা ঘরে বাইরে সমান পারদর্শী।

মেয়েদের সমান অধিকারের কথা উঠলেই, চারিদিকে হৈ হৈ রব ওঠে, প্রচন্ড বাঁধা সামনে এসে দাঁড়ায়।এগুলো কারা কেন করে আমরা জানি। ঠিক একই কারণে এখনও নারী শ্রমিকদের বেতন পুরুষদের সমান দেয়া হয় না।।

আগের যুগের প্রেক্ষাপটে ছেলেরা পৈতৃক সম্পত্তি পুরোটাই ভোগ করতো।কাজেই বাবা-মা কে দেখতে তারা বাধ্য ছিল। অসহায়, বিপন্ন বোনেরাও, নিজের বাড়িতে ভাই, ভাবির বোঝা হয়ে উঠতো। এখন যুগ, সময়, প্রেক্ষাপট পাল্টে গেছে, ঘরে ঘরে একটা দুইটা করে সন্তান।কে বাবা মা, পরিবার দেখবে, কেউ বলতে পারে না। দেখতে চাইলে ছেলে মেয়ে দুজনেই দেখছে।

এখন হাজার হাজার নারী গার্মেন্টস কর্মীরা তাদের পরিবার চালাচ্ছে।কোন মেয়ে কোন দিক দিয়ে পরিবার, বাবা মা, ভাই বোন কে দেখছে কেউ জানে না। তারপরও সমান অধিকার তো দূরের কথা, যতটুকু আইনে আছে, ততটুকুই ঘরে ঘরে দিতে অনীহা। এগুলোর ব্যখ্যা কি?

এমন অনেক পরিবার আছে দেশের আনাচে কানাচে, যেখানে মেয়েদেরকে, সম্পদের অধিকারের প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত করে যাচ্ছে অবলীলায়। সমান অধিকারের কথা বললে বারবার ধর্ম এবং আইনে নেই বলে খড়্গ ওঠানো হয়। কিন্তু কালের বিবর্তনে, জীবনের প্রয়োজনে কতকিছুই তো এই পৃথিবীতে পরিবর্তন করা হয়েছে, যদি সেটা যুক্তি সঙ্গত হয়। আসলে মেয়েদের মাথা তুলে বলিষ্ঠ ভাবে দাঁড়াতে দিতে যত অনীহা, তাহলে দমন করার সুখ থেকে বঞ্চিত হতে হবে। তাই এই জুজুর ভয় দেখিয়ে চুপ করতে বাধ্য করা হয়। তাহলে যতটুকু প্রাপ্য বলে স্বীকার আছে, ততটুকুও অনেক ঘরে যখন দেয়া হয় না, তখন ধর্ম এবং আইনে আছে বলে, দৃঢ় ভাবে নারীদের পক্ষ নিয়ে দেখাও না পুরুষ সমাজ!

আমার চোখে তো শুধুই অসন্মান, অমর্যাদা আর জুলুম ভেসে ওঠে।অথচ এরকমও ছেলে সন্তান ঘরে ঘরে থাকে, যারা বাবা দাদার পরিচয় ধুলিস্যাৎ করে দেয় সব উড়িয়ে।

ঐ মেয়ে সন্তানই হয়তো, যুগ যুগ ধরে পারিবারিক অস্তিত্ব বজায় রেখে, বহন করে যাবে, সন্মানের সাথে।এর পরেও অন্ধ কিছু বাবা মা ও সমাজের লোক, মেয়েদেরকে বংশধর বা বংশের প্রদীপ বলতে নারাজ!!

পৃথিবীতে স্বার্থ, ইগো না ভালবাসা, কোন টা বড়??

(চলবে…)