প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট রুজভেল্টের একটি উক্তি হল, ‘নারীরা অনেকটা টি-ব্যাগের মতো… আপনি জানতেও পারবেন তিনি কতটা শক্তিশালী যত ক্ষণ না তাঁকে গরম জলে ফেলা হচ্ছে।’ কথাটি একদম সত্যি।
তাঁর কথার প্রতি সুবিচার করছেন ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের গুরগাঁও শহরের বাসিন্দা ঊর্বশী যাদব। অসুস্থ স্বামী এবং দুই সন্তানকে একার হাতে সামলাচ্ছেন তিনি।
গুরগাঁও-র সেক্টর ১৪-তে গুলাব রেস্তোরাঁ-র ঠিক বিপরীতে একটি ঠেলায় ছোলে-কুলচা বিক্রি করেন তিনি। প্রাক্তন সেনাকর্মীর পুত্রবধূ এবং একদা বড় চাকুরিজীবী অমিতের স্ত্রীর পরিচয় নিয়েই তিনি এই পেশা বেছে নিয়েছেন। এর জন্য তাঁকে বহুবার হেনস্থাও হতে হয়েছে। তবুও লেগে থেকেছেন। বিমুদ্রাকরণের মেয়াদ শেষ হয়েছে গতকাল। এর মাঝে বহু মানুষ সমস্যায় পড়েন। যেমনটা পড়েছেন ঊর্বশী-ও।
ঊর্বশী এক সময় শিশুদের পড়াতেন। তাই তাঁর মধ্যে শিক্ষক সত্তা এখনও জাগ্রত। ডিজিটাল লেনদেন তাঁর পক্ষে করা বিশেষ কঠিন ছিল না। কিন্তু একলা এগিয়ে না গিয়ে, সকলকে এক সঙ্গে নিয়ে এগোনোর পক্ষে ছিলেন ঊর্বশী। তাই শুধুমাত্র নিজের মোবাইলেই পেটিএম অ্যাপ ডাউননলোড করেননি, আশপাশে খাবার এবং অন্যান্য সামগ্রি বিক্রি করতে আসা বহু মানুষকে এর সহজপাঠ দিয়েছেন উর্বশী। ব্যবসার মন্দার সময়ে এই পাঠ সাধারণ মানুষদের নতুন করে রোজগার বাড়াতে সাহায্য করেছেন। সে দিক থেকে দেখলে, ঊর্বশী-কে এঁদের পরিত্রাতাও বলা চলে।
পথ এখন যতটা সহজ ও মসৃন, ততটা ছিল না। স্বামী অমিত হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ায় চাকরি ছাড়তে বাধ্য হন। দুই সন্তান নিয়ে তখন অথৈ জলে ঊর্বশী। তিনি বুঝেছিলেন, এমন কিছু করতে হবে যাতে সন্তান এবং সংসার সামলেও টাকা রোজগার করা যায়। এক দিন তাঁর নজর পড়ে রাস্তার পাশের একটি খাবারের ঠেলায়। তখনই ঠিক করেন, খাবারই বিক্রি করবেন তিনি। বিলাসব্যসনে থাকা সুখী পরিবারের বধূর পক্ষে আচমকা রাস্তায় দাঁড়িয়ে খাবার বিক্রি করা সহজ নয় তা যে কেউ এক কথায় স্বীকার করবেন।
সেই কঠিন কাজকে সহজ করতে সাহায্য করেছেন এক সাংবাদিক-ব্লগার সোনালি। গোটা ঘটনাটি নিজের ফেসবুক পেজে লেখেন তিনি। তার পর থেকে পরিস্থিতি পাল্টাতে শুরু করে। এখন স্বামী অমিতও ঊর্বশী-কে সাহায্য করেন।
সূত্র: এই সময়