আতিয়া মহল থেকে উদ্ধার ৫৫ বাসিন্দা, অভিযান চলছে - Women Words

আতিয়া মহল থেকে উদ্ধার ৫৫ বাসিন্দা, অভিযান চলছে

সিলেট দক্ষিণ সুরমার  শিববাড়ি এলাকার ‘আতিয়া মহলে’ চলছে জঙ্গি বিরোধী অভিযান।  অভিযান শুরুর পর ভবনের মধ্য থেকে নারী ও শিশুসহ ৫৫ বাসিন্দাকে উদ্ধার করা হয়েছে।

সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (মিডিয়া) জেদান আল মুসা জানান,আজ শনিবার সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে উদ্ধার অভিযান শুরু করে ১১টা পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে তাদের উদ্ধার করে নিয়ে আসে সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো সদস্যরা। সকাল পনে ৯টার দিকে সেনাবাহিনীর ১৭ পদাতিক ডিভিশনের  জিওসি মেজর জেনারেল আনোয়ারুল মোমেনের নেতৃত্বে আতিয়া মহলে জঙ্গি বিরোধী এ অভিযান শুরু হয়। এ অভিযানের নাম দেয়া হয়েছে ‘অপারেশন টোয়াইলাইট’।

অভিযান শুরুর আগে সেখান থেকে গণমাধ্যমকর্মীসহ আশপাশের লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ।

ভবনের ভিতর থেকে সকাল ১০টা ৫ মিনিটের দিকে পরপর দুটি গুলির শব্দ শোনা গেছে। এরপর আর কোনো শব্দ শোনা যায়নি।

প্রসঙ্গত, পুলিশের একাধিক সূত্র জানায়, পাঁচতলা ভবনটির নিচতলায় একটি ফ্ল্যাটে নব্য জেএমবি নেতা মুসার স্ত্রী মর্জিনা বেগম  এবং আরো কয়েকজন জঙ্গি অবস্থান করছে নিশ্চিত হয়ে পুলিশ ভবনটি ঘেরাও করে।

সূত্রগুলো জানায়, গত চার-পাঁচদিন ধরে পুলিশ সদর দপ্তরের একটি টিম সিলেটে অনুসন্ধান চালাচ্ছিল। অনুসন্ধানের এক পর্যায়ে তারা ‘আতিয়া মহল’ নামে একই নকশার পাঁচতলা ও চারতলা বিশিষ্ট পাশাপাশি দুটি ভবনকে চিহ্নিত করেন। ভবন দুটির মালিক পাশ্ববর্তী দক্ষিণ সুরমার বান্দরঘাটের বাসিন্দা উস্তার আলী। উস্তার আলীর কাছ থেকে পাওয়া দুটি ভবনের ভাড়াটিয়াদের তথ্য যাচাই বাছাই করতে গিয়ে জঙ্গিদের অস্তিত্ব বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়।

বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে পুলিশকে নিয়ে অভিযানে যায় বিশেষ বাহিনী। রাতে ঘিরে ফেলা হয় আতিয়া মহলের চারপাশ। রাত ৩টার দিকে পুলিশ ভবনে ঢুকার চেষ্টা করলে ভেতর থেকে ‘আল্লাহ আকবর’ ধ্বনিতে ভেতরে বিষ্ফোরণ ঘটানো হয়। এসময় পুলিশ পাল্টা গুলি চালিয়ে এলাকা ঘেরাও করে রাখে। ফজরের আযানের পাঁচ মিনিট পর জঙ্গিদের ইউনিটের মূল ফটকে তালা লাগিয়ে দেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এরপর পার্শ্ববর্তী চারতলা ভবন থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হয়।

গতকাল  শুক্রবার বিকেলে ‘জঙ্গি আস্তানা’ আতিয়া মহলের চারিদিকে সোয়াত ও বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দল অবস্থান নেয়। অভিযানে সহযোগিতা করার জন্য রাত সাড়ে ৮ টার দিকে সেনাবাহিনীর একটি বিশেষ দল সেখানে পৌঁছায়।

বাসার মালিক উস্তার আলী জানান, তিন মাস আগে কাউসার আলী ও মর্জিনা বেগম নামে দুজন স্বামী স্ত্রী পরিচয়ে ভবনের নিচতলার চার নম্বর বাসাটি ভাড়া নেন। কাউসার আলী নিজেকে ভোগ্যপণ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান প্রাণ এর কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দেন। সব নিয়মকানুন মেনেই তাদের বাসা ভাড়া দেওয়া হয়েছে। তাদের জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপিও রাখা হয়েছে। পাঁচতলা এই ভবনের দুটি ইউনিটে ২৯টি ফ্ল্যাট রয়েছে বলে তিনি জানান।