বাল্য বিয়েতে রাজি না হওয়ায় নবম শ্রেণির ছাত্রীকে মারধর - Women Words

বাল্য বিয়েতে রাজি না হওয়ায় নবম শ্রেণির ছাত্রীকে মারধর

বাল্য বিয়েতে রাজি না হওয়ায় নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে মারধর করার অভিযোগে তার সৎ নানী ও মামাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।নির্যাতিত মেয়েটির নাম স্মৃতি আক্তার।

স্মৃতির দাদির দায়ের করা মামলার প্রেক্ষিতে আজ শনিবার দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গুরুতর অসুস্থ্য স্মৃতি বর্তমানে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

ঘিওর উপজেলার বানিয়াজুড়ি গ্রামের হুমায়ুন কবিরের মেয়ে স্মৃতি আক্তার জয়নগর উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী।

স্মৃতির সাথে কথা বলে জানা গেছে, জন্মের সময় তার মা মারা যান। পরে তার বাবা  আরেকটি বিয়ে করেন। বাবা দীর্ঘদিন ধরে প্রবাসী। স্মৃতি থাকে সদর উপজেলার গিলন্ড গ্রামে তার নানা আলমগীর হোসেনের কাছে। স্মৃতির আপন নানি মারা যাওয়ার পর নানা আলমগীর হোসেন বিয়ে করেন লাভলি ইয়াসমিনকে। এই ঘরে তার দুই ছেলে রেজাউল করিম সাজু ও ফরিদুল ইসলাম রাজু। অর্থাৎ স্মৃতি থাকে সৎ নানি ও মামাদের সংসারে।  

স্মৃতি আক্তার জানান, গত ৩০ এপ্রিল স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে আসার পরপরই সৎ মামা সাজু তার বিয়ে ঠিক হয়েছে বলে জানান। সাজু বলেন, পাত্র বিবাহিত এবং একটি ব্যাংকে চাকরি করেন। তবে স্ত্রী মারা গেছেন। এই ঘরে দুই সন্তান আছে। কিন্তু বাল্য বিয়ে এবং বয়স্ক পাত্র বলে সে রাজি হয় না। ক্ষিপ্ত হয়ে রাজু তাকে বেদম মারধর করে। সে চিৎকার করতে থাকলে তার সৎ নানী মুখ বেঁধে মারধর করতে নির্দেশ দেন। সে(নানী) নিজেও মারধর করে।  এরপর থেকে তাকে ঘরে বন্দি করে রাখা হতো।  

স্মৃতি জানান, পাত্রের কাছ থেকে তার সৎ নানী ৫০ হাজার টাকা হাওলাত নিয়েছে। তাকে ওই বয়স্ক লোকটার সাথে বিয়ে দিয়ে হাওলাত থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্যই এত জোড়াজুড়ি করা হয়েছে।  

এ ঘটনার পর গত ৫ জুন সে কোনো রকমে ওই বাড়ি থেকে পালিয়ে বানিয়াজুড়ি গ্রামে দাদা লাল মিয়ার বাড়িতে ওঠে। গত বৃহস্পতিবার গুরুতর অসুস্থ্য অবস্থায় তাকে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত শুক্রবার দাদি মমতাজ বেগম বাদী হয়ে লাভলি ইয়াসমিন, আলমগীর হোসেনসহ চারজনের বিরুদ্ধে মারপিট ও হত্যার হুমকির অভিযোগে মামলা করেন।  

এ ব্যাপারে মানিকগঞ্জ সদর থানার ওসি হাবিবুল্লা সরকার জানান, অভিযোগের প্রেক্ষিতে লাভলি আক্তার ও রেজাউল করিম সাজুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অপর দুই আসামিকেও গ্রেপ্তারের চেস্টা চলছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

সূত্র: কালের কন্ঠ